মোঃ মোনায়েম হোসেন মন্ডল:
চট্টগ্রাম রেলওয়ের হিসাব বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা টেন্ডার বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফাইলে কাগজপত্রের ভুল ত্রুটি ধরে মাসের পর মাস ফাইল পত্র ঝুলিয়ে রেখে হয়রানি করছে। তারা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন উপায়ে করছে লক্ষ লক্ষ টাকার অবৈধ লেনদেন।
প্রকাশ,বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এই সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে রয়েছে একটি দাপ্তরিক সংস্থা হিসাব বিভাগের ডিএফএ ষ্টোর। এই ডিএফএ ষ্টোরের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দায়িত্ব অফিসে উপস্থিত থেকে সরকারি সেবামূলক কাজ সমূহ পরিচালনা করা। কিন্তু তারা সেবামূলক কাজ না করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র মাসের পর মাস ফাইলবন্দি করে হয়রানি ও ঘুষ বাণিজ্য করে যাচ্ছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রামে সরঞ্জাম বিভাগ গত ২৮/০৯/২০২২ ইং তারিখে স্ক্রাব মালামাল বিক্রির জন্য টেন্ডার আহ্বান করে। আহ্বানকৃত টেন্ডারে অনেকেই অংশগ্রহণ করে। তার মধ্যে থেকে এই স্ক্রাব মালামাল বিক্রয়ের জন্য ৫টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচিত করে। নির্বাচিত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গুলো হলো- ঢাকার মেসার্স জে আর এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স হামিদ স্টীল কর্পোরেশন,নারায়ণগঞ্জের মেসার্স মনির এন্ড সন্স,চট্টগ্রামের এস এ কর্পোরেশন ও মেসার্স শওকত এন্ড ব্রাদার্স। উল্লেখিত নির্বাচিত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ নিয়ম-কানুন মেনে প্রত্যেকেই নিজ নিজ টেন্ডারের টাকা যথাসময়ে জমা দেন।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো-উল্লেখিত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ৫টি যথাসময়ে তাদের টেন্ডারে প্রাপ্ত
স্ক্রাব মালামালের বিপরীতে নির্ধারিত মূল্য যথাসময়ে পরিশোধ করলেও মালামাল ছাড় না দিয়ে তাদের কাগজপত্র দুই মাস যাবৎ ফাইল বন্দি করে রাখা হয়েছে।
সুত্র জানায়,ব্যবসায়ীদের এই সব কাগজপত্র ফাইল বন্দি করে রাখার ফলে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উল্লেখিত নির্বাচিত একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের একজন স্বত্তাধিকারী জানায়, বর্তমানে ডিএফএ ষ্টোরের হিসাব বিভাগে কর্মরত একাউন্টস অফিসার মোঃ মামুন মিয়া ও হিসাব রক্ষক দিলসাদ জাহান একে অপরের সহযোগিতায়
স্ক্রাব মালামাল ক্রয়ের জন্য নির্বাচিত ব্যবসায়ীদের হয়রানি ও ঘুষ বাণিজ্য করে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে হিসাব বিভাগের একাউন্টস অফিসার মোঃ মামুন মিয়া এর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, আমার দপ্তরে এ সংক্রান্ত কোন ফাইল জমা নাই। আমার টেবিলে ফাইল আসলে যথাসময়েই ফাইল ছেড়ে দেই। অভিযুক্ত ফাইল প্রসঙ্গে তিনি বলেন,টেন্ডার প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের কোন সমস্যা নেই,তবে এই সমস্ত কাজ আমাদের দুই বিভাগ থেকে সম্পন্ন হয়। কোন কাগজপত্রের কমতি বা কোন সমস্যা থাকলে তা পুনরায় সংশোধন করে চাওয়া হয়। এ কারণেই হয়তো
স্ক্রাব মালামাল সরবরাহে সময় লাগছে ! তবে প্রস্তুতি চলছে, খুব তাড়াতাড়ি সরবরাহ করা হবে।
তাই এলাকার শান্তি প্রিয় সচেতন জনগণসহ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা মাননীয় রেল মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে সুষ্ঠু ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার জোরালো দাবি জানান।