‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মে তিনফসলি জমিতে রপ্তানি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা- ইপিজেড স্থাপনের পরিকল্পনা বাতিলসহ ১৬ দফা দাবিতে বুধবার ১৮ মে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় (ডিসি অফিস) ঘেরাও ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, গাইবান্ধা জেলা কমিটি এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে গাইবান্ধা জেলা শহরে আসেন তিন শতাধিক আদিবাসী। এরপর গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের এলজিইডি কার্যালয়ের সামনে থেকে আদিবাসীরা তীর-ধনুক এবং বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আসেন। তাদের সাথে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মে বসবাসকারী বাঙালিরাও অংশ নেন। এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হলে তারা ডিসি অফিসের সামনের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন।
সমাবেশে বক্তব্য দেন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, গাইবান্ধা জেলা কমিটির আহ্বায়ক ফিলিমন বাস্কে, সদস্য সচিব খোকন সুইটেন মুরমু, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, আদিবাসী নেতা ব্রিটিশ সরেন, মাথিয়ার্স মার্ডি প্রমুখ। পরে তারা প্রধানমন্ত্রী বরাবরে লেখা ১৬ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করেন।
সমাবেশে আদিবাসীদের ১৬ দফার দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহবায়ক ও জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড.সিরাজুল ইসলাম বাবু,জেলা জাসদ সভাপতি গোলাম মারুফ মনা,সমাজকর্মী জাহাঙ্গীর কবির তনু,মোর্শেদ হাসান দীপন, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলা শাখার আহবায়ক গোলাম রব্বানী মুসা,ওয়াকার্স পার্টির জেলা নেতা মৃণালকান্তি বর্মন,সাঁকোয়া ইপিজেড বাস্তবায়ন কমিটির নেতা অ্যাড.কুশলাশীষ চক্রবর্তী,অ্যাড. ফারুক আহমেদ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা আদিবাসীদের ১৬ দফা দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে গোবিন্দগঞ্জে ছয় বছর আগে তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার, তাঁদের জমিতে ইপিজেড নির্মাণ না করা এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার পূরণ করার দাবি জানান।
১৬ দফার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য দাবির মধ্যে রয়েছে, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠন,দখলি শর্তে খাস জমি, বসতভিটা,কবরস্থান,পুকুর আদিবাসীদের নামে প্রদান,প্রাকৃতিক বনে আদিবাসীদের প্রথাগত অধিকার নিশ্চিত করা, আদিবাসীদের নামে মিথ্যা বন মামলা ও হয়রানি বন্ধ, আদিবাসীদের ক্ষমতায়নের জন্য জাতীয় সংসদে আদিবাসী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত ও সংরক্ষিত আদিবাসী নারী আসনের ব্যবস্থা করা,আদিবাসীদের মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ চিরতরে বন্ধে আইন প্রণয়ন।