গাজীপুরে মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মসজিদের মোয়াজ্জীন গ্রেপ্তার
গাজীপুর মহানগরের ৩৫নং ওয়ার্ডস্থ পূর্বকলমেশ্বর এলাকার বাইতুল মামুর জামে মসজিদ ও ইসলামিয়া মাদ্রাসার মোয়াজ্জীন মো:ইমরান হোসেন(২৩) কতৃক ৯ বছরের শিশু মুন্নী ছদ্ম নাম কে কৌশলে ধর্ষণ করেন ।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ৭/৪/২০২২ইং তারিখ প্রতিদিনের ন্যায় বাইতুল মামুর জামে মসজিদ ও ইসলামিয়া মাদ্রাসায় আরবী পড়ার উদেশ্যে দুপুর ২.০০ ঘটিকায় যায় । প্রচন্ড গরমের কারনে মুন্নী আইসক্রিম খাচ্ছিল মসজিদের নিচ তলায় । কাম লোলুপ, বেহায়া ইমরান (২৩) ঐ ছাত্রীকে বলে রোজার সময় এভাবে সবার সামনে আইসক্রীম খেতে নেই । তুমি মসজিদের উপরে চলে যাও । এর কিছুক্ষণ পর ধর্ষক ইমরান উপরে যায় এবং অবুঝ নাবালিকা শিশুটিকে আদর আলিঙ্গন করতে থাকে মাদ্রাসার রান্নার ঘরে । ভুক্তভোগী বাধা প্রদান করলে চর থাপ্পর দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে কৌশলে পায়জামা খুলে ধর্ষণ কার্য সম্পন্ন করে । ধর্ষক ইমরান হোসেন,বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানধীন বাদলপাড়া গ্রামের রুস্তম আলী কাজীর ছেলে ।
এমতবস্থায় ঐ ছাত্রী বিকাল ৪.০০টার দিকে বাসায় চলে যায় । বাসায় যাওয়ার পর আনমনা হয়ে বাথরুমে গিয়ে লজ্জ্বাস্থান ধৌত করে ।বাথরুম থেকে বের হয়ে আবারও আনমনা হয়ে নিশ্চুপ হয়ে খাটের কোনায় গিয়ে বসে থাকে এবং কান্না করে । এহেন অবস্থায় দেখতে পেয়ে ভুক্তভোগীর অভিভাবক তাকে জিজ্ঞাসা করলে ভয়ে ভয়ে কাপাকাপা কন্ঠে উপরোক্ত বর্ননা দিতে থাকে।
এরপর ভূক্তভোগীর পিতা মাতা ঐ মাদ্রসায় গিয়ে দেখতে পান, মাদ্রাসা ছুটি হয়েছে এবং ধর্ষণকারী ইমরান পলাতক । ইফতারির পূর্ব মহূর্ত পর্যন্ত এমরানকে অনেক খোঁজাখুঁজির করে পাওয়া যায়নি ।
এদিকে মেয়ের অস্তিরতা দেখে উদ্বীগ্ন হয়ে পড়েন অভিভাবকরা । ইতিমধ্যে অনেকের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায় ।
পরবর্তীতে জাতীয় জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল করে ঘটনার আদ্যপান্ত জানালে । জাতীয় জরুরী সেবার ফোন পেয়ে জি এমপি‘র গাছা থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে দেখতে পান এবং কৌশলে ধর্ষক ইমরানকে আটক করেন। উৎসুক জনতার ভীড়,শতশত মানুষ স্লোগান দিতে থাকেন,ধর্ষকের গালে,জুতা মারো তালে তালে । ধর্ষকের ফাঁসি চাই । তারাবির নামাজ শেষে অবস্থা বেগতিক দেখে ঘটনাস্থলে উপস্থিত শাহ্ ফরিদ আহমেদ উপ-পুলিশ পরিদর্শক,গাছা থানা জিএমপি তার উপরোস্থ কর্মকর্তাদের ধর্ষণের ঘটনার আদ্যপান্ত জানালে তাৎক্ষনিক জিএমপি‘র সহকারী পুলিশ কমিশনার গাছা জোন মো: আহসানুল হক,ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাছা থানার, ইসমাইল হোসেন,ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরীসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন । মাদ্রসার অন্যান্য শিক্ষকদের ও ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পান কর্মকর্তারা । গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন জানান,জাতীয় জরুরী সেবার কল পেয়ে আমরা সেখানে গিয়েছি এবং ঘটনার সত্যতা পেয়েছি । ধর্ষক ইমরানের বিরোদ্ধে ভিকটিমের পিতা জিল্লুর রহমান মামলা দায়ের করেছে । যার মামলা নং ৫/২০২২ তারিখ: ৮/৪/২০২২ইং
আসামীকে কোর্টে প্রেরণ করেছি ।
এদিকে এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা জানান,এই মাদ্রাসায় কিছুদিন পরপর একেকটা লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে । এর পিছনে কোন না কোন কারন অবশ্যই আছে ।
মসজিদ কমিটির কোন দুর্বলতা থাকতে পারে বলে জানান তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান,স্থানীয় একজন সরকারী চাকুরীজীবি,আবদুল্লাহ্ নিকেতন এর মালিক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ্ (সাগর) দীর্ঘকাল যাবৎ সভাপতির পদ আগলিয়ে রাখা এবং মসজিদের ইমাম,মুয়াজ্জীনসহ মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগ তিনি একাই সম্পন্ন করে থাকেন । নামকাওয়াস্তে কমিটি থাকলেও সকল কর্মকান্ডে তিনি একাই সিদ্ধান্ত নেন । সুতরাং যেকোন ঘটনার দায়ভার তিনি এড়াতে পারেন না ।
উল্লেখ্য,ইতিপূর্বেও একই মাদ্রাসায় ছাত্র বলাৎকারের ঘটনা ঘটেছিল ।