সুচিন্তিত বিবেচনার মাধ্যমে ভিন্ন চিন্তাধারাকে সহনীয় পর্যায়ে স্থান দেয়ার নাম পরমতসহিষ্ণুতা। রাষ্ট্রের সব শ্রেণী, পেশা, দলমত ও সব ধর্মের অনুসারীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা প্রদর্শনও এর অন্তর্ভুক্ত। এটি গণতন্ত্রের অন্যতম নিয়ামকও। কোনো সমাজে ভিন্নমতের অনুশীলন ও চর্চা না হলে সে সমাজকে সভ্য ও গণতান্ত্রিক বলার সুযোগ থাকে না। যে সমাজে ভিন্নমতের কদর নেই, সেখানে গণতন্ত্রও নেই। দার্শনিক ভলতেয়ায়ের ভাষায়, ‘আমি তোমার সাথে দ্বিমত পোষণ করতে পারি, কিন্তু তোমার মতপ্রকাশের অধিকারের নিশ্চয়তার জন্য আমি জীবন দিতেও কুণ্ঠিত নই।’ মূলত এটিই গণতন্ত্র ও সভ্যতার মানদণ্ড।
জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকার বিষয়টি অতিগুরুত্বপূর্ণ হলেও আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের অতীতে যেমন শৃঙ্খলমুক্ত ছিল না; এখনো নয়। সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণার একটা অনাকাক্সিক্ষত প্রবণতা অতীতে আমরা লক্ষ করেছি। The Newspaper (Announcment Of declaration) Act-1975 মাত্র চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত পত্রিকা রেখে সব সংবাদপত্র বন্ধের ঘটনাও কারো অজানা নয়। এ ছাড়াও গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের জন্য অতীতে প্রণীত হয়েছিল নানা ধরনের কালাকানুন। অবশ্য ’৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার গণমাধ্যম কর্মীদের অব্যাহত দাবির মুখে আন্দোলনরত রাজনৈতিক জোটের ঘোষণা অনুযায়ী জরুরি ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ সংশোধন ও ১৬, ১৭ ও ১৮ ধারা বাদ দিয়ে অধ্যাদেশ জারি করেছিল।