সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, দুপুর ৩:৫ সময়
পীরগঞ্জে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকা নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে
মোস্তফা মিয়া পীরগগঞ্জ (রংপুর) থেকে :
পীরগঞ্জে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশে কয়েকমাস ধরে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও দশমৌজা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে গোপনে পিছনের তারিখে ৩ টি পদে নিয়োগ দিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা (উমাশি) কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন মন্ডল! শুধু তাই নয়, নিয়োগকৃতরা বিদ্যালয়ে যোগদান বা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না থাকলেও তাদের এমপিওভুক্তির জন্য বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক উমাশি অফিসে ফাইল সেন্ড করেছেন। অথচ, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক দু'জনই নিয়োগ দেয়ার কথা অস্বীকার করছেন। এদিকে ৩ পদে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা উৎকোচ নেয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
অনলাইনে দাখিলকৃত তথ্যে দেখা গেছে, ১২৭৭৭৮ নং ইআইআইএন নম্বরধারী দশমৌজা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক পদে নাজমুল হক প্রধান এর পিডিএস আইডি নং- ১০১৮০১৯৪৬, নিরাপত্তা প্রহরী পদে মাসুদ রানার পিডিএস আইডি নং- ১০১৮০১৯৫০ এবং আয়া পদে মোছা: সিমুর পিডিএস আইডি নং- ১০১৮০১৯৪৮। এই ৩ জনকেই চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিকে গোপনে নিয়োগ দেখানো হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে। অপরদিকে জনতা ব্যাংক লি: এর পীরগঞ্জের মাদারগঞ্জ শাখায় বিদ্যালয়টির সঞ্চয়ী হিসাব নম্বরে আয়া পদে চাকুরী প্রাপ্ত মোছা: সিমুর স্বামী আনারুল ইসলাম নিজে উৎকোচের ৮ লক্ষ টাকা জমা দেন। ওই টাকা প্রধান শিক্ষক এওয়াইএম তৈয়মুর রহমান কৌশলে ব্যাংক থেকে তড়িঘড়ি করে উত্তোলন করে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। নিয়োগের উৎকোচের টাকা যাতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অস্বীকার বা আত্মসাৎ করতে না পারে, সেজন্যই ব্যাংকে ওই টাকা জমা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখিত পদগুলোতে ডোনেশনের নামে প্রধান শিক্ষক প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সুত্র আরও জানিয়েছে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ রায়পুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, কাবিলপুর ইউনিয়নের লালদীঘি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এবং কুমেদপুর ইউনিয়নের রসুলপুর মাহতাবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বেশ কয়কটি পদে নিয়োগে দূর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য তা স্থগিত করেন। পীরগঞ্জ উপজেলায় স্বচ্ছ নিয়োগ এবং মেধাবীদের চাকুরী নিশ্চিত করতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশে নিয়োগ কার্যক্রম আপাততঃ বন্ধ রয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন মন্ডল বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশে পীরগঞ্জের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৮/৯ মাস ধরে নিয়োগ বন্ধ থাকায় দশমৌজা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে কোন নিয়োগ দেয়া হয়নি।
অপরদিকে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক এওয়াইএম তৈয়মুর রহমানও নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি চেপে গিয়ে বলেন, বিদ্যালয়ের শুন্যপদে নিয়োগের প্রসেস করা আছে, সুযোগ হলে নিয়োগ দেয়া হবে। এমপিওভুক্তির জন্য ফাইল সেন্ড করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি। গোপনে নিয়োগের ঘটনায় ওই এলাকায় তোলপাড় চলছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হলে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগে দূর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।