শুক্রবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের নিয়ে মানববন্ধন করে ‘মায়ের ডাক’ নামের একটি সংগঠন। মানববন্ধনে এ আকুতি জানান গুম হওয়া সাইফুর রহমান সজীবের বাবা শফিকুর রহমান।ছয় বছর আগে ছেলে গুম হয়। ছেলেকে ফিরে পেতে ছোটাছুটি করেছেন সবখানে। সন্ধান মেলেনি। এখন বাবার আকুতি, ছেলে যদি বেঁচে না থাকে,অন্তত কবরটা পেলে জিয়ারত করতেন তিনি।
মানববন্ধনে অংশ নেন গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্তান,বাবা-মা,ভাই-বোনসহ আত্মীয়-স্বজনরা। তাদের কারও হাতে, কারও গলায় ঝোলানো ছিল গুম হওয়া স্বজনের ছবি। মানববন্ধনের ব্যানারে লেখা ছিল ‘গুম বন্ধ কর, গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও। সবাই নিখোঁজ স্বজনদের ফিরে পেতে চান। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
সাইফুর রহমান সজীবের বাবা শফিকুর রহমান বলেন ‘২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল বেলা ১২টার দিকে কুড়িল চৌরাস্তা থেকে আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায় র্যাব। আমরা র্যাব ও ডিবি অফিসে, প্রত্যেক থানায় যোগাযোগ করি। কেউ আমাদের কোনো তথ্য দিতে পারেনি। এখন পর্যন্ত ছেলের কোনো খবর পেলাম না। অন্তত ছেলের কবরটা যদি পাই, তাহলে তার কবরটা জিয়ারত করতে পারব। ছেলের শোকে তার মা দুনিয়া থেকে চলে গেছে।
তরিকুল ইসলাম ঝন্টুর মা হাসিনা বেগম বলেন ‘আমি গুম হওয়া সন্তানের মা। ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর বাসার সামনে থেকে আমার ছেলে নিখোঁজ হয়। আজ পর্যন্ত ছেলের খবর পাইনি। ছেলের শোকে তার বাবাও মারা গেছে।
মোয়াজ্জেম হোসেন তপুর মামা কামাল জানান, ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি তার ভাগ্নে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গুম হয়।
মাসুমের মা আয়েশা আলী বলেন ‘রাত- দিন-মাস-বছর চলে যাচ্ছে। সন্তান ফিরে আসে না। আমরা কার কাছে যাব,কার কাছে বলব আমাদের কষ্টের কথা? সন্তানকে ফিরে না পেলে মরেও শান্তি পাবো না।
সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন মারুফা ইসলাম ফেরদৌসী বলেন‘২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর আমার ভাইকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রশাসনের এমন কোনো জায়গা নেই,যেখানে যাইনি। আদালতেও গিয়েছি,কিন্তু ভাইকে ফিরে পাইনি। ভাইকে ফেরত পেতে আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে?