আলমগীর কবীর:
পৃথিবীর আশ্চর্য সুন্দর সুন্দর জিনিসগুলির মধ্যে সমুদ্র অন্যতম। সমুদ্রের অথৈ জলের গভীরে লুকিয়ে রয়েছে হাজারও বিস্ময় ও রহস্য। তাই ভ্রমন পিপাসু বাঙালির সমুদ্র ভ্রমণের ইচ্ছে নিয়ে কোনো প্রশ্ন আসেনা।
মণপিপাসু বাঙ্গালীদের মধ্যে আমিও একজন। বছরে অন্তত দুবার রোজকার একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি খুঁজে নেওয়ার উদ্দেশ্যে আমরা পাড়ি জমাই কোথাও না কোথাও। কখনো ছুটে যাই অতীত ইতিহাসকে ছুঁয়ে দেখবার উদ্দেশ্যে, কখনো এই যান্ত্রিক নগর সভ্যতা থেকে মুক্তির জন্য ছুটে যায় প্রকৃতির কোলে।
অতি সম্প্রতি এমনই একটি ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম সমুদ্রে। ইতিপূর্বে বহুবার সমুদ্র ভ্রমণে গেলেও এইবারের অভিজ্ঞতাটি সম্পূর্ণ অনন্য এবং অভিনব। সেই অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করার উদ্দেশ্যেই এই প্রতিবেদনের উপস্থাপনা করছি ।
হোটেলে পৌঁছে ব্যাগপত্র রেখে আধঘন্টা মতন বিশ্রাম নিয়ে আমরা পৌঁছালাম একেবারে সমুদ্রের ধারে। পৌঁছে দেখি সমুদ্র তখন উত্তাল। মুহুর্মুহু বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে সমুদ্রের পাড়ে। সেইসঙ্গে বাতাসের আওয়াজ আর বিষম সমুদ্র গর্জন। তবে দুর্যোগের কোন সম্ভাবনা নেই; আকাশে রোদ ঝলমল করছে, কিন্তু সূর্যের তেমন তাপ অনুভূত হচ্ছে না।
সফর সঙ্গী হিসেবে আমরা ক জন । মাত্র ৩০ মিনিটের নোটিশ দাতা হলেন,সাংবাদিক,কলামিষ্ট,নাট্যকার,চলচিত্র নির্মাতা.পীযুষ প্লাবন মিতা,সংবাদকর্মী, আলমগীর কবীর,অভিনেতা আনোয়ার হোসেন খান,রন্জিত কুমার দাস,আয়নাল হোসেন,আব্দুল মজিদ,মহাদেব,আব্দুল খালেদ ,শ্রী কমল দাস,সমর চন্দ্র,পাইলট রাজ কুমার ও ছাব্বির আহমদ ।
এমন কৌতহল আর আবেগী মানুষটার পাল্লায় পড়ে কেউ পাড় পাইনি আমরা । এমন নাছর বান্দা বাংলাদেশে খুব কমই আছেন॥
বৃহস্পতিবার ১ এপ্রিল ২০২২ইং দিবাগত রাত ১২.০০টা ছুঁইছুঁই ওমনি মুঠোফোনে ক্রিং ক্রিং শব্দ,ফোন রিসিভ করার সঙ্গে সঙ্গে অপর প্রান্ত থেকে মোটা কন্ঠে ভেসে আসলো তাড়াতাড়ি প্রস্তুত হন সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার যাবো । কি আর করার অগত্তে বেড়িয়ে পড়লাম । সকলে সমস্বরে ২টি ব্যক্তিগত গাড়ীতে আমরা ১২ জন । যাত্রাকালিন সময়ে ক্লান্তি কাটাতে কখনো,কবিতা আবৃতি,কখনো গান ,কখনো হইহুলল্লোর আবার কখনো কখনো চুটকির আড্ডা । বেশ ভালই কেটেছিল সময়টা । বিশেষ করে চট্রলা শহরের আগেই মহাসড়কের দু-ধারে সবুজে সবুজে আচ্ছাদিত ,ছোট ছোট টিলা,পাহাড়,মনোমুগ্ধকর পরিবেশ ।
সফরকালে বিরম্বনা কিছুটা হয়েছিল বটে ,তবে ক্লান্তিটা কেটে গেছে যাত্রা বিরতির খাবার শেষে ।
কিছু দূরে লোকজন সমুদ্রের ঢেউয়ে স্নান করছে; আমরা এমতাবস্থায় খানিকক্ষণ সমুদ্রসৈকতে বালির উপরে বসে রইলাম। বালির উপর বসে ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কতক্ষণ কেটে গিয়েছিল জানিনা।
কক্সবাজার: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের শাণিত রূপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। ১২০ কিলোমিটারের সমুদ্র সৈকত ঘিরে প্রচীন ঐতিহ্য এবং দর্শনীয় স্থানের কারণে প্রতি বছর কক্সবাজারে ছুটে আসেন বিপুল সংখ্যক পর্যটক।
কক্সবাজারের আদি নাম পালংকী। ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স নামের এক কর্মকর্তা ১৭৯৯ সালে এখানে এসে একটি বাজার স্থাপন করেন। আর তার নাম অনুসারে কক্স সাহেবের বাজার এবং পরে কক্সবাজার হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
কক্সবাজারের উত্তরে চট্টগ্রাম, পূর্বে-বান্দরবান পার্বত্য জেলা ও মিয়ানমার, পশ্চিম ও দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর।
২৪৯১.৮৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ জেলায় রয়েছে ৫টি নদী। এগুলো হলো- মাতামুহুরী,বাঁকখালী,রেজু,কোহালিয়া ও নাফনদী।
দ্বীপ রয়েছে ৫টি। এগুলো হল- মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া, শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন।
প্রাচীন ঐতিহ্য: কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকরা কক্সবাজারের প্রচীন ঐতিহ্য ঘুরে দেখেন। এর মধ্যে আলোচিত হচ্ছে আজগবি মসজিদ। এটি ১৬০০-১৭০০ খৃস্টাব্দে শাহ সুজার আমলে তৈরি হয়। এটি চৌধুরী পাড়া মসজিদ হিসেবেও পরিচিত। কক্সবাজার পৌরসভার বিজিবি ক্যাম্পের উত্তর দিকে এর অবস্থান। রিকশা কিংবা টমটমযোগে যাওয়া যায় সেখানে।
সমুদ্রের একটি ভাঙ্গা তরঙ্গ পুরো সমুদ্রকে ব্যাখ্যা করতে পারে না
আমাদের জীবনের সুখ-শান্তিগুলো হলো ,সমুদ্র নিয়ে ফটো ক্যাপশন। বর্তমানে সমুদ্র নিয়ে ফটো ক্যাপশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ সমুদ্রে গিয়েছেন অথচ ফটো আপলোড করেন নি সেটি বেমানান। ভালো একটি ছবির সাথে কেবল ভালো একটি ক্যাপশন দিতেই অনেকেই অনলাইনে খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। তাদের জন্যে এখানে সমুদ্র নিয়ে ফটো ক্যাপশন উপস্থাপন করা হয়েছে।
মনে রাখবেন সুখ ভ্রমণের একটি উপায়,
একটি গন্তব্যনয়
রোদে থাকুন, সাগরে সাঁতার কাটুন,
বনের বাতাস গ্রহন করুন ।
সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো যা সবসময় আসে না ।