কুষ্টিয়ায় ছেলে হত্যার বিচার না পেয়ে, পিতা হত্যা করেছে প্রধান আসামিকে।
কুষ্টিয়াপ্রতিনিধি,ওয়াহিদুজ্জামান অর্ক
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে হাসিনুর রহমান হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি মজিবর রহমান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারােক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ।
তাতে তিনি বলেছেন নিহত হাসিনুর রহমান তাঁকে ( মজিবর রহমান) ছেলে হত্যা হওয়ার পর হুমকি দেয় মেরে গুম করে ফেলার।
সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন বলেন , ‘ এটা কোনাে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয় । শুনেছি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে এমন ঘটনা ঘটেছে । এর সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিক বিচার হওয়া উচিত । গত শনিবার সকালে ফিলিপনগর ইসলামপুর এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ে হাসিনুরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় । এ ঘটনায় হাসিনুরের মামাতাে ভাই আবদুল জব্বার বাদী হয়ে দুজনের নামসহ অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন । সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে মজিবর রহমান উল্লেখ করেছেন , ২০১৯ সালের ১২ আগস্ট তার ছেলে আনােয়ারকে স্থানীয় কয়েকজন তরুণ ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন । যারা হত্যা করেন তাঁরা মূলত স্থানীয় আন্টু মেম্বার ও হাসিনুরের ক্যাডার বাহিনীর লােক । আন্টু মেম্বার ও হাসিনুরের হুকুমেই আনোয়ারকে হত্যা করা হয়।এবং থানাতে কোন হত্যা মামলা নেয়া হয়নি সাংসদ সরওয়ার জাহান এর নির্দেশে। এক বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ছেলে হত্যার বিচার পাননি। নিজের চায়ের দোকানে বিভিন্ন সময়ে হওয়া আলােচনায় ছেলে হত্যার পেছনে আটু মেম্বার ও হাসিনুরের জড়িত থাকার অভিযােগ করতেন তিনি । বিষয়টি জানতে পেরে গত শুক্রবার রাত আটটার দিকে হাসিনুর তাঁর দোকানে আসেন । তখন হাসিনুর হুমকি দিয়ে মজিবরকে বলেন , ‘ তাের ছেলেকে খুন করছি , তােকেও খুন করব । যদি তুই মানুষের কাছে আমাকে নিয়ে আবার কোনাে উল্টাপাল্টা কথা বলিস , তােকেও গুম করে দিবাে । ‘ জবানবন্দিতে মজিবর আরও উল্লেখ করেন , ওই দিন রাতে হাসিনুরের কাছ থেকে এমন হুমকি পেয়ে তিনি বাড়ি চলে যান । এরপর থেকে তার মনে ক্ষোভ জন্মে । পরে তিনি হাসিনুরকে হত্যার উদ্দেশ্যে দোকানের ভেতর একটি হাঁসুয়া লুকিয়ে রাখেন । পরিকল্পনা করেন যখনই সুযােগ পাবেন , হাঁসুটি দিয়ে হাসিনুরকে কুপিয়ে হত্যা করবেন । গত শনিবার সকালে এমন সুযােগ পেয়ে হাসিনুরকে কুপিয়ে পালিয়ে যান তিনি । এদিকে হাসিনুর হত্যার প্রতিবাদে রােববার সন্ধ্যায় আয়ােজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও মুক্তিযােদ্ধা হায়দার আলী । প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন হাসিনুরের মামাতাে ভাই ও সাংসদ সরওয়ার জাহান । সভায় সাংসদ অভিযােগ করেন , হাসিনুরকে হত্যার জন্য মজিবরকে অর্থ দেওয়া হয়েছে । রাজনৈতিক সাহস দেওয়া হয়েছে । বলা হয়েছে পরিবারের ( মজিবরের ) দায়দায়িত্বও নেওয়া হবে । সুতরাং হত্যাকাণ্ডটি ষড়যন্ত্রের ফসল । এর পেছনে বড় শক্তি আছে । সাংসদ বলেন , “ শুনেছি প্রায় এক মাস আগে থেকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে । হাসিনুরকে শুধু মজিবর হত্যা করেনি । এটা একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড । আমাকে ও আমার পরিবারকে বিতর্কিত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে । ” কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন , পারিবারিক , সামাজিক ও রাজনৈতিক সব বিষয় নিয়েই তদন্তকাজ চলছে ।