মৌলা-চৌমুহনী সড়কের বেহাল দশা সড়কে ভারী যান চলাচল বন্ধের দাবীতে বিক্ষোভ
সেলিম মাহবুব, সিলেট থেকেঃ
সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের মৌলা-চৌমুহনী বাজার পাকা সড়কের বেহাল দশা। সড়ক দিয়ে ধারন ক্ষমতার চেয়ে অধিক মালামাল নিয়ে ট্রাক্টর ও ভারি যানবাহন চলাচল করায় সড়কটির এ বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকাবাসীর দাবী। নোয়ারাই ইউনিয়নের লিচুর গ্রাম নামে খ্যাত মানিকপুর যাওয়ার প্রধান সড়কের এ অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছে মানিকপুর সহ অন্তত ১২টি গ্রামের মানুষ। সম্প্রতি গৃহ নির্মাণের জন্য নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে অধিক লোডের ট্রাক্টর নিয়মিত চলাচল করায় সড়কটির মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়। বর্তমানে এ সড়ক যান চলাচলের অনুপোযুগি হয়ে উঠে। আরসিসি এ সড়কের পুরো অংশেই ফাটল সৃষ্টি হয়ে ছোট-বড় খন্ডে বিভক্ত হয়ে গেছে। এতে সিএনটি সহ ছোট গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে এ সড়কটি হয়ে উঠেছে বিপদজনক। এদিকে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়লেও মালামাল বহনকারী ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়নি। ফলে সড়কটির অবস্থা ক্রমেই চলাচলেরও অনুপযোগি হয়ে পড়ছে। এতে ফুঁসে ওঠেছে এলাকার সাধারণ মানুষ। ৩ অক্টোবর সকালে স্থানীয় লোকজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঘন্টা ব্যাপী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিক্ষোভকারীদের দাবী সড়কটি অত্যন্ত সরু। দুটি সিএনজি কোনভাবে ক্রস করতে পারে। কয়েকটি সরু সেতু রয়েছে এ সড়কে। ভারি যানবাহন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা খুবই বিপদজনক। পিকআপ এর মতো ছোট গাড়ি আসা-যাওয়া করলে ক্রসিংয়ের সময় মারাত্মক ঝুকি থাকে। সম্প্রতি ওভারলোড নিয়ে ট্রাক্টর দিবা-রাত্রি চলাচল করায় রাস্তাটি ভেঙ্গে টুকরো-টুকরো হয়ে পড়ে। সড়কের বিভিন্ন অংশে আস্তর উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি করেছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় পায়ে হেটে চলাও দুরহ হয়ে পড়ে। এ সড়কের পাশে রয়েছে একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন কমপ্লেক্স। কয়েক হাজার শিক্ষার্থী সহ মৌলা, চৌমহনী বাজার, রাজারগাও, মানিকপুর, কচুদাইড়, চানপুর, কালাটিলা, রংপুর, গোদাবাড়ি, কলাবাড়ি, বাশটিলাসহ অন্তত ১২ টি গ্রামের হাজার-হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করছে। দুরের ছাত্র-ছাত্রীরা সিএনজি ও অটো রিক্সা দিয়ে প্রতিদিন নিজ-নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করতো এ সড়ক দিয়ে। বর্তমানে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ায় দুরের এসব শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। তারা পায়ে হেটে প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা পারি দিয়ে স্কুল-মাদ্রাসায় যেতে হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে দু’একটি সিএনজি চলাচল করলেও ভাড়া গুনতে হয় অতিরিক্তি। যা শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। এ ছাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের সেবাভোগি মানুষ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যেতে চরম ভোগান্তির শিকার হয়। সেবা গ্রহন করতে তখন বাধ্য হয়েই অধিক ভাড়া দিয়ে গাড়িতে উঠতে হচ্ছে তাদের। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় লোকজন এ সড়ক দিয়ে চলাচলরত ইট, পাথর ও বালুভর্তি কয়েকটি ট্রাক্টর আটক করার চেষ্টা করে। এসময় ট্রাক্টর চালক এসব মালামাল সরকারী কাজে ব্যবহার করার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানায়। ওভার লোড নিয়ে ভারি যানবাহন চলাচলের কারনে রাজারগাঁও গ্রামের পাশে এ সড়কের একটি সরু সেতু মাঝখান অনেকটাই দেভে গেছে। যেকোন মুহুর্তে সেতুটি ভেঙ্গে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা করছে স্থানীয়রা। এ সড়ক দিয়ে ট্রাক্টর সহ সব ধরনের ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার দাবী জানান বিক্ষোভকারীরা। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি পুনঃ মেতামত ও প্রসস্থকরনের দাবী তোলেন তারা। বিক্ষোভ চলাকালে বক্তব্য রাখেন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ফখরুল ইসলাম মামুন, আওয়ামীলীগ নেতা শুকুর আলী, রুস্তুম আলী, জামাল উদ্দিন প্রমুখ