মোস্তফা মিয়া- পীরগঞ্জ,রংপুর থেকে:
রংপুর জেলার উপজেলা গুলোর অধিকাংশ স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা গুলোতে মানা হচ্ছেনা শিক্ষক নিয়োগে “বে-সরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (ntrca) নির্দেশনা।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান,পরিচালনা কমিটি সহ উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসারদের দিতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা উৎকোচ।
প্রকাশ,ইতিপুর্বে বে-সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কুল-কলেজ গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটি কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগে মেধার মুল্যায়ন না করে নিয়োগ বাণিজ্যে সহ সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীীর আশ্রয় গ্রহন করা ওপেন সিক্রেট ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছিল শিক্ষক নিয়োগ দিতে গিয়ে পরিচালনা কমিটি, প্রতিষ্ঠান প্রধান সহ জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের মাঝে উৎকোচ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব লেগে থাকত।সেই সাথে ক্ষমতার লড়াইয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা সহ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং মন্ত্রনালয়ের সাথেও চলতো নানাবিধ মামলা-মোকদ্দমা।আর এই নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাকে কেন্দ্রকরে সারাদেশে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তির দ্বার প্রান্তে এসে দাড়িয়েছিল।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর শিক্ষক নিয়েগে বিশৃংখলা, নিয়োগ বাণিজ্যে রোধ এবং মেধার মুল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পাদনের নিমিত্ত্বে সরকারের শিক্ষা নীতি নির্ধারকদের পরামর্শে গঠন করা হয় বে-সরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (ntrca)। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান,পরিচালনা কমিটি ও জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিস নিয়োগ বাণিজ্য সহ নিয়োগ সংক্রান্ত কোন অনিয়ম করতে পারবেনা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো শুণ্য বা সৃষ্ঠপদে শিক্ষক নিয়োগের আবেদন করলে (ntrca) কর্তৃপক্ষ মেধা যাচাইয়ে নির্বাচিত শিক্ষকদের নিয়োগ প্রদান করবে। সেক্ষেত্রে উপজেলা-জেলা শিক্ষা অফিসার, পরিচালনা কমিটি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান গন নির্বাচিত প্রার্থীদের নিকট কোন প্রকার উৎকোচ অথবা বকশিস গ্রহন করতে পারবে না। এর বিন্দুমাত্র ব্যর্তয় ঘটলে অই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পরিচালনা কমিটি সহ উপজেলা-জেলা শিক্ষা অফিসারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে (ntrca) কর্তৃপক্ষ ।কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য যে, রংপুর জেলা শিক্ষা অফিস সহ জেলার ৮টি উপজেলা শিক্ষা অফিস সহ অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতেই মানা হচ্ছেনা এ নির্দেশনা। নির্বাচিত প্রার্থীদের ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ছাড়া নিয়োগ মিলছে না বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অসংখ্য ভুক্তভোগি শিক্ষক।রীতিমত একটি অঘোষিত সিন্ডিকেটের সৃষ্ঠি হওয়ায় এদরে বিরুদ্ধে কেহ মুখ খেলারও সাহস পায়না।উৎকোচ দিতে অস্বীকৃতি অথবা প্রতিবাদ করলেই নানা হয়রানির স্বীকার হতে হয় নিরিহ শিক্ষদের।
বিষয়টি সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, পীরগাছা সহ রংপুর সদর উপজেলার প্রায় ১৮টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় নিয়োগ প্রাপ্ত ভুক্তভোগি ২৬জন শিক্ষকের নিয়োগ সংক্রান্ত করুণ কাহিনী। চাকুরীতে অযথা হয়রানির ভয়ে কেহ প্রতিবাদ ও অভিযোগ করারও সাহস পায়না। প্রতিবাদ ও অভিযোগ করলে প্রতিকার তো দুরের কথা, উল্টো তাদেরই হতে হয় নানা হয়রানির স্বীকার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী এ ২৬ জন শিক্ষক জানান- প্রতিবাদ ও অভিযোগ করার কারনে এদের কারও বেতন স্থগিত, কেহ সাময়িক বরখাস্ত, কাহারও আবার ২ থেকে ৩ বছর যাবৎ নিয়োগ পেয়েও এখন পর্যন্ত এমপিও এর আবেদন করছেন না জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিসার সহ পরিচালনা কমিটি ও প্রতিষ্ঠান প্রধান গন। অনেকের আবার মোটা অংকের অর্থ উৎকোচ এই সিন্ডিকেড কে দিতে না পারায় এমপিও ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগিরা আরও জানায়-ঘঞজঈঅ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্বাচিত হওয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদান পেতে হলে পরিচালনা কমিটিকে কমপক্ষে ১ লক্ষ, প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ১ লক্ষ, উপজেলা-জেলা শিক্ষা অফিসার সহ অফিস স্ট্যাফদের উৎকোচ গুনতে হয় ২ থেকে ৩লক্ষ টাকা। এ উৎকোচের অর্থ দিতে কোন প্রার্থী ব্যর্থ হলেই শুরু হয় নানা টালবাহানা। বাধ্যহয়ে নির্বাচিত শিক্ষক গন বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি ও কর্মসংস্থানের তাগিতে পিতামাতার জমাজমি বিক্রি করে এ অন্যায় দাবী পুরন করে থাকে।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার (মাধ্যমিক) রোকসানা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন-আমরা (ntrca)এর নির্বাচিত শিক্ষকদের সচ্ছতার সাথে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকি। উৎকোচ বা বকসিস এর বিষয়টি কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান,পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদস্যগন এ অনিয়মের সাথে জরিত হওয়ার চেষ্ঠা করে থাকে। আমরা এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ পেলে সাথে সাথে তার ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকি। অপরদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি জানান-আমরা সব সময় (ntrca) এর নির্বাচিত শিক্ষকদের সচ্ছতার সাথে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে থাকি। কিন্তু উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসার গন সহ অফিস স্ট্যাফদের মোটা অর্থ উৎকোচ না দিলেই নানা অযুহাতে এমপিও ফাইল ফেরত পাঠিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ নিয়োগ প্রত্যাশী শিক্ষকদের হয়রানি করে থাকে।
ভুক্তভোগী অসহায় শিক্ষক ও সচেতন মহল মাননীয় শিক্ষামনন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের বিভাগীয় স্বচ্ছ তদন্ত পুর্বক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে ঘঞজঈঅ এর শিক্ষক নিয়েগের স্বচ্ছতা ফিরিয়ে এনে নিয়োগ বানিজ্যে বন্ধের জোর দাবি জােিয়ছেন।