মহানগরীর সালনা এলাকায় মাদ্রাসার এক শিশুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার, গ্রেফতার ১ ।
গত ০৭ মার্চ ২০২০ তারিখ সকাল অনুমান ১০.৩০ ঘটিকার দিকে গাজীপুর মহানগরীর সালনা মীরেরগাঁও এলাকায় মাদ্রাসার পোষাক পরিহিত এক শিশুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে নিহত শিশুর পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভাব হয়নি এবং পরবর্তীতে র্যাবের তদন্তে পথে ফেলে যাওয়া মাদ্রাসার আইডি কার্ডের মাধ্যমে নিহত শিশুর পরিচয় মিলে। সাথে সাথে অপহরণ এবং খুনীদের আইনের আওতায় আনার জন্য তাদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১, স্পেশালাইজড কোম্পানী, পোড়াবাড়ী ক্যাম্প কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন, (জি), বিএন ছায়া তদন্ত শুরু করেন এবং র্যাবের সোর্স নিয়োগসহ সকল ধরনের গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসিতেছিল।
এরই ধারাবাহিকতায়ঃ অদ্য ০৮ মার্চ ২০২০ তারিখ ভোর অনুমান ০৩.৩০ ঘটিকার সময় র্যাব-১, স্পেশালাইজড কোম্পানী, পোড়াবাড়ী ক্যাম্প, গাজীপুর এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উক্ত হত্যাকান্ডের মূলহোতা রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় ভিকটিমের বাসায় সু-কৌশলে আত্মগোপন করে আছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে অত্র কোম্পানীর কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন, (জি), বিএন এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় অফিসার/ফোর্স সহ রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিম মোঃ ইব্রাহিম(১০), পিতা-মোঃ মনির হোসেন, হাজারীবাগ, ডিএমপি, ঢাকা এর অপহরণ ও হত্যাকারী তার আপন ফুফাতো ভাই আসামী ১। মোঃ বনি আমিন(২১), পিতা-মোঃ আবুল কালাম আজাদ, মাতা-মোসাঃ খাদিজা বেগম, সাং-মাইঠা, থানা- ও জেলা-বরগুনা, এ/পি-মান্ডা পিয়ার আলী সড়ক, থানা-মুগদা, ডিএমপি, ঢাকা’কে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার বর্ণনাঃ ধৃত আসামী বনি আমিন এর ভাষ্যমতে, বনি আমিন নিহত ভিকটিমের আপন ফুফাতো ভাই। ভিকটিম পেশায় একজন মাদ্রাসার ছাত্র, সে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় ইকরা দারুল-উলুম মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণীর শিক্ষর্থী ছিল। ভিকটিমের বাবা মনির হোসেন ধৃত আসামীর আপন মামা হওয়ায় গত ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তার বাসায় থেকে মামা মনির হোসেন এর রাজধানী নিউ মার্কেট এলাকায় ক্রোকারিজের দোকান পরিচালনা করত। আসামী তার মামা মনির হোসেন এর বাসায় থাকার সুবাদে বিভিন্ন সময় তার মামী মোসাঃ হালিমা বেগমের উপর আসামীর মনে ক্রোধ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও আসামীর মামার বাসার থাকাকালীন সময় একটি মেয়ের সাথে তার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। প্রেমিকাকে দামী উপহার এবং তাকে নিয়ে হানিমুনে যাওয়ার জন্য তার অনেক টাকার প্রয়োজন হয়, যা তার কাছে ছিলোনা। তাই অনেক টাকার প্রয়োজনে এবং মামীর উপর দীর্ঘদিনের ক্ষোভের প্রতিশোধ নিতে আসামী পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে গত ০৫ মার্চ ২০২০ তারিখ দুপুর ১৪০০ ঘটিকার সময় তার মামাতো ভাই ভিকটিম ইব্রাহিম(১০)’কে তার হাজারীবাগ মাদ্রাসা হইতে বাবার অসু¯’্যতার কথা বলে অপহরণ করে এবং কৌশলে গাজীপুর মহানগরীর সালনা এলাকায় নিয়ে আসার পর ভিকটিমের মাদ্রাসার ব্যাগ এবং আইডি কার্ড ফেলে একই তারিখ অনুমান ১৯.৩০ ঘটিকার সময় সালনা মীরেরগাঁও রেল লাইনের পাশে জঙ্গলের ভিতর নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে পুকুরের ভিতর ফেলে রেখে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে সালনায় এলাকায় এসে একটি মসজিদে এশার নামাজ আদায় করে। পরবর্তীতে আসামী বিভিন্ন মোবাইল ফোনে মাধ্যমে ভিকটিমের কন্ঠ নকল করে ভিকটিমের বাবার মোবাইল ফোনে কল করে অপহরণের কথা জানায় এবং মুক্তিপন হিসেবে ০৫ লক্ষ টাকা দাবি করে ও বিকাশের মাধ্যমে ০১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তার উদ্দেশ্য সফল করে পুনরায় হাজীবাগ মামার বাসায় ফিরে যায়। গত ০৬ মার্চ ২০২০ তারিখ ভিকটিমের বাবা বিকাশের মাধ্যমে ০১ লক্ষ টাকা হত্যাকারীকে প্রদান করে। পরবর্তীতে আসামী গত ০৭ মার্চ ২০২০ তারিখ গাজীপুরে ভিকটিমের লাশ উদ্ধারের সংবাদ শুনে তার মামা-মামীর সাথে কাঁন্নার অভিনয় করে এবং তাদের সাথে ঢাকা আজিমপুর কবর ¯’ানে লাশের জানাযা সহ লাশ দাফন কাজ সম্পন্ন করে, যাতে করে তাকে কেউ সন্দেহ করতে না পারে। অবশেষে র্যাব তাকে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা ভিকটিমের বাসা হতে হত্যাকারী বনি আমিন’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী বিন আমিন উক্ত খুনের ঘটনার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং ঘটনার মর্মান্তিক বর্ণনা দেয়।