শেখ রাজীব হাসান, গাজীপুর থেকে
গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন সাতাইশ ব্যাংকপাড়া এলাকায় মাদকাসক্ত কিশোর গেং কতৃক স্ত্রী সন্তানদের সামনে আপন (৩০) নামে এক কৃষককে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার দুপুর ১২.৩০ ঘটিকার সময় এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত আপন ময়মনসিংহ জেলার সদর থানাধীন আজমপাড়া গ্রামের আবদুল সালাম মিয়ার ছেলে। জীবীকার তাগিদে স্ত্রী লাকি আক্তার, দুই কন্যা পাপিয়া (৮) ও আনিসা (২)কে নিয়ে টঙ্গীর সাতাইশ ব্যাংকপাড়া এলাকার কামাল হোসেনের ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
নিহতের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, সকাল আনুমানিক ১১,৩০ ঘটিকার সময় জয়, ফাহিম, জাহাঙ্গীর, জলিল ও সবুজসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জন ছেলে আমাদের বাসায় এসে আমার স্বামীকে গালীগালাজ করতে থাকে। আমার স্বামী তাদের গালীগালাজের প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা তাকে মারধর করতে থাকে আর বলতে থাকে আমার স্বামী ওদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গেছে। এদের সকলের কাছে রড, ছুরি ছিলো প্রায় ঘন্টা খানেক আমার স্বামীকে আমাদের সামনে মারধর করতে থাকে আশেপাশের লোকজন চেয়ে চেয়ে দেখছিলো কেউ এগিয়ে আসেনি। আশেপাশের লোকজন পুলিশে খবর দিয়েছে শুনে সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে আমার স্বামীকে সাতাইশ গুশুলিয়া ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাকাত বলেন আমার স্বামী মারা গেছেন।
¯’ানীয়রা জানান, নিহত আপন একজন কৃষক ছিলেন। ব্যবসায়ী সুমন গুশুলিয়া এলাকায় জয়, ফাহিম, জাহাঙ্গীর, জলিল ও সবুজকে নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যাবসা করে আসছিলো। মাদক খাওয়ায় নিষেধ করাকে কেন্দ্র করে আপনের সাথে সুমনের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে মাদক ব্যাবসার একটি চক্র শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে আপনের সাথে বাক বিতর্ক শুরু করে পরে দুপুর ২টার দিকে প্রতিপক্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা আপনকে একা পেয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী আপনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.বিল্লাল হোসেন নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
এবিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার চৌকস তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাসান জানান, হত্যাকাডের ঘটনা শোনার পরপরই এডিসি শাহাদাৎ স্যার ওসি এমদাদুল হক স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘটনার সাড়ে তিন ঘন্টার মধ্যে সাতাইশ পশ্চিমপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আপন হত্যাকান্ডে জড়িত আল-আমিন, জয়, সুমন ও আরমানকে রক্ত মাখা ছুরিসহ গ্রেফতার করি। এ বিষয়ে একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মো. এমদাদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের ৪জনকে রক্তমাখা ছুরিসহ গ্রেফতার করা হয়েছে ও জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।