স্বাস্থ্যকথা;
মানব শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল কিডনি বা বৃক্ক। বর্তমানে আধুনিক জীবনযাপনের কিছুকিছু অভ্যাস মারাত্বক বিপদ ডেকে আনছে কিডনির। বেশিরভাগ সময় মানুষ বুঝতেই পারে না শরীরের ভেতরে ক্ষতিগ্রস্থ হতে চলেছে রেচনতন্ত্রের প্রধান এই অংশটি।
বিশেষ করে ৭ টি অভ্যাস আমাদের অজান্তেই কিডনির ক্ষতি করে চলেছে। কিডনির সুস্থতা বজায় রাখতে এই খারাপ অভ্যাসগুলো অবশ্যই এড়িয়ে চলা উচিত।
১. ওষুধের অত্যধিক ব্যবহার : শরীর গঠনের জন্য ব্যবহারকারী হেলথ সাপ্লিমেন্টস ওষুধ এবং ব্যথা নাশকারী ওষুধ অর্থাৎ পেইনকিলারের ব্যবহার বর্তমানে প্রায়শই হয়ে থাকে। যদিও অতিরিক্ত ওষুধ বিশেষত ব্যথা নাশকারী ওষুধের ক্রমাগত সেবন দীর্ঘস্থায়ী কিডনির সমস্যার কারণ হতে পারে। এটি কিডনি নষ্টের অন্যতম কারণ।
২. অতিরিক্ত লবণের ব্যবহার : খাদ্য লবণে থাকে সোডিয়াম। আর অতিরিক্ত সোডিয়াম কিডনির জন্য ডেকে আনতে পারে বিপদ। তাই কিডনির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে অত্যধিক সোডিয়াম এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
৩. মাত্রাতিরিক্ত চিনি গ্রহণ : চিনিকে বলা হয় এম্পটি ক্যালোরি। যে খাবার এবং পানীয়গুলোতে উল্লেখযোগ্য পুষ্টি নেই কিন্তু ক্যালোরি বেশি সেগুলোকে ‘এম্পটি ক্যালোরি’ বলা হয়। তাই চিনি বেশি খেলে দেহে স্থুলতা বৃদ্ধি পা। স্থুলতা থেকে দেহে উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের প্রবণতা বাড়ে। ফলস্বরূপ,কিডনির রোগ হওয়ার ঝুঁকি দ্রুত বেড়ে যায়।
৪. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না খাওয়া : কিডনিতে পাথর একটি খুবই পরিচিত সমস্যা। পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান না করলে এই রোগের ঝুঁকি সবচেয়ে বৃদ্ধি পায়৷ সঠিকমাত্রায় পানি পান কিডনির বিপাকীয় বর্জ্য নির্গত করতে সাহায্য করে এবং কিডনিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধ করে।
৫. নিয়মিত ব্যায়াম না করা : অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে বসে থাকা জীবনযাপন আপনার কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অতএব, আপনার কিডনির স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। স্বল্প হলেও শারীরিক কার্যকলাপ কিডনির সুস্থতায় জরুরি।
৬. ধূমপান করা : শরীরে অন্যান্য বহু রোগ ডেকে আনার সঙ্গে সঙ্গে ধূমপান কিডনিরও মারাত্বক ক্ষতি করে। ধূমপান কিডনিতে রক্তের সঞ্চালন কমায় এবং কিডনির রক্তনালীগুলিকেও সংকুচিত করে। ধূমপানের ফলে কিডনির ধমনী ঘন ও শক্ত হয়ে যায়। তাই সুস্থ কিডনি চাইলে যেকোন মূল্যে ধূমপানের অভ্যাস পরিত্যাগ করা উচিত।
৭. প্রস্রাব চেপে রাখা : অনেক মানুষ দীর্ঘসময় প্রস্রাব চেপে রাখেন। তবে এই অভ্যাস কিডনির ক্ষতি করতে পারে বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় ধরে ইউরিন বন্ধ করার ফলে হতে পারে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন,ব্লাডার ইনফেকশন,এমনকি কিডনিতে পর্যন্ত ইনফেকশন হতে পারে। তাই এই অভ্যাস থাকলে আজই সেটা পরিত্যাগ করুন।
সূত্র,স্বাস্থ্যকথা