অবাধ বাকস্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধকতা দূর করার আহ্বান সম্পাদক পরিষদের
: ছাত্র-জনতার ৩৬দিনের বিক্ষোভ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ২০২৪ইং সাবেক সরকারের পতনের পর বর্তমান সরকারের কাছে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধকতা দূর করার আহ্বান জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। সাইবার নিরাপত্তা আইন ও আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা সব মামলাও প্রত্যাহার ও বাতিল করার দাবি জানায় সংগঠনটি। গত শনিবার অনুষ্ঠিত সম্পাদক পরিষদের এক সভা থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহ্ফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
সাম্প্রতিক গণ-আন্দোলনে আহত ও নিহত সাংবাদিকসহ ছাত্র, শিক্ষক, যুবক, সাধারণ নাগরিক, পুলিশের সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। সংবাদপত্রের সম্পাদকদের এই সংগঠন বলছে, এ আন্দোলন ঘিরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি করা হয়রানিমূলক মামলাসহ অতীতের সব হয়রানিমূলক মামলা বাতিল ও প্রত্যাহার করতে হবে। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা সব মামলাও প্রত্যাহার ও বাতিল করতে হবে।
সম্পাদক পরিষদের নেতারা বলছেন, বিগত সরকার বাক্স্বাধীনতা, সৃজনশীলতা এবং স্বাধীন সংবাদপত্রশিল্পের কণ্ঠ রোধ ও নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিল। বিশেষ করে বেশ কয়েকটি নিবর্তনমূলক আইন করার উদ্যোগ নিয়েছিল। এসব আইনের মধ্যে রয়েছে উপাত্ত সুরক্ষা আইন (খসড়া) ২০২২, ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি রেগুলেশন ২০২১ (খসড়া), গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন ২০২২ (খসড়া), জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৭, দ্য প্রেস কাউন্সিল (সংশোধন) অ্যাক্ট, ২০২২ (খসড়া)। প্রস্তাবিত এই বিশেষ আইনগুলো অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণ-আন্দোলনের সময় সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলের কার্যালয় আক্রান্ত হয়েছে, সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনাকে সম্পাদক পরিষদ সমর্থন করে না। একই সঙ্গে পেশাদারি বাদ দিয়ে নীতি বিবর্জিত ও লেজুড়বৃত্তির সাংবাদিকতা বর্জনীয় বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।
সম্পাদক পরিষদ আরও বলেছে, অতীতের মতো সংবাদপত্রে সরকারি ও বেসরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়ার ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপের চেষ্টা বন্ধ করতে হবে। সরকারি সংস্থা ডিএফপির সব কার্যক্রম স্বচ্ছ ও প্রকাশ্য হতে হবে। প্রেস কাউন্সিলকে পুনর্গঠন করে কার্যকর সংস্থায় পরিণত করতে হবে।
ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ডেইলি স্টার সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহ্ফুজ আনাম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন,প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, নিউএজ সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নুরুল কবীর, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির,বণিক বার্তা সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক জাফর সোবহান, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন,সমকাল সম্পাদক আলমগীর হোসেন,দেশ রূপান্তর সম্পাদক মোস্তফা মামুন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি এবং সংবাদ নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার করিম। এ ছাড়া যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম জুমে সভায় অংশ নেন দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক এম রমিজউদ্দিন চৌধুরী ও সুপ্রভাত বাংলাদেশ সম্পাদক রুশো মাহমুদ।