খবরের সময় ডেস্ক:রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪, রাত ২:১৯ সময়0129
ছবি; এরশাদ হোসেন
: গাজীপুর মহানগরের ৩৭ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজ উদ্দিনের ছেলে;এরশাদ (৩৬) এর বিরুদ্ধে অভিনব পন্থায় ভিন্ন ভিন্নভাবে লোভনীয় আশ্বাসে এলাকার অসংখ্য মাসুষের সাথে প্রতারণা করেছে । জিএমপি‘র গাছা থানায় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,স্থানীয় ৩৭নং ওয়ার্ড এলাকার লুৎফর রহমানকে বাজার দরের চেয়ে তুলনামুলক কম দামে ইট,বালু দেওয়ার কথা বলে ৪০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন । টাকার বিপরীতে ইট,বালু চাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ প্রাননাশের হুমকি দেয় এরশাদ । কালক্ষেপণ হওয়ায় এক পর্যায়ে ইট,বালু না দিয়ে লুৎফরকে ৪০ লক্ষ টাকার ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমি এর একটি চেক প্রদান করে । যার নং ৭৮২৬৪৩৫ তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং,মের্সাস এরশাদ রাইচ এজেন্সী এন্ড ভ্যারাইটিজ ষ্টোর । এরশাদ কতৃক স্বাক্ষরিত চেকটির সমপরিমান ব্যালান্স না থাকায় ঐ চেকটি প্রত্যাখ্যাত হয় ।
এরপর এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আবার ভয়ভীতি হুমকি প্রদান করেন যার ফলশ্রুতিতে জিএমপি‘র গাছা থানায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারন ডায়েরী করেন। যার জিডি নং ১১৭৪ তারিখ ২১ অক্টোম্বর ২০২৪ইং । মেসার্স মোল্যা ট্রেডিং কর্পোরেশন এর বরাবর ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ টাকার) চেক প্রদান করে সেখানেও প্রতারণা করেন এই এরশাদ । ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমি: যার চেক নং এস বি- ০০৭৮৯৬৫ । মিজান স্টীল কর্পোরেশন কে ২,০০ ,০০০ দুই লক্ষ টাকার চেক দিয়ে প্রতারণা করেণ এই এরশাদ ।
একই কায়দায় টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকার ৫১নং ওয়ার্ডবাসী মো:হাবিবুর রহমানের নিকট থেকে ৬,৫০,০০০ (ছয় লক্ষ পঞ্চাশ হাজার )টাকা হাতিয়ে নেয় এই প্রতারক এরশাদ । ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমি: যার চেক নং ৭৮২৬৪৩৭ তারিখ ১০ মার্চ ২০২১ ইং জিএমপি‘র গাছা থানার জিডি নং ১২৩৭ ।
আমির হামজা রাশেদ এর নিকট থেকে চেকের মাধ্যমে প্রতারণা করেন ২,০০,০০০(দুই লক্ষ) টাকা যার নং ৭৮২৬৪৩৩ এর মি. রাসেল এর সঙেগ প্রতারণা করেণ ৫০,০০০ পঞ্চাশ হাজার টাকা,যার চেক নং ৭৮২৬৪৯ ডাচ ব্যাংক লিমিটেড তারিখ ২২/১২/২০২০ইং ।
এবার বিকাশ এজেন্ট এর দোকানদের সঙ্গে ভয়াবহ প্রতারণার ফাঁদ পেতে কয়েকজনকে নি:স্ব করেছে । অভিযোগ পাওয়া যায়, চান্দরা এলাকার ফোন ফ্যাক্স বিকাশ দোকানী এহসানুল হক রবিন এর নিকট থেকে প্রতারণা করেছে ৩,৫০,০০০ (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা । একই এলাকার অপর বিকাশ দোকানী মি. শাহীন এর নিকট থেকে প্রতারণা করেছে ৬৫,০০০ (পয়ষট্রি হাজার )টাকা । এছাড়াও একাধিক সাধারণ মানুষকে ভূলভাল বুঝিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক এরশাদ হোসেন ।
প্রকৃত ঘটনার বরাতে জানা যায়,এই এরশাদ ছিল ভবঘুরে প্রকৃতির । ২০১৭ সালের দিকে অত্র এলাকার মমতাজ চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ফার্মে সিইও পদে চাকুরী পান তিনি । সেই চাকুরির সুবাদে এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং ছোট বড় সাপ্লাইয়ারদের সঙ্গে পরিচয় হয় তার । সেই পরিচয়ে ঐ মালিকের ব্যবসার অন্তরালে নিজ নামে একটি ট্রেডিং কোম্পানী খুলে বসেন এরশাদ । মালিকের অবর্তমানে কৌশলে নিজ নামীয় কোম্পানীর চালান বিল ভাউচার ব্যবহার করে রাতারাতি বনে যান কোটিপতি। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয় মমতাজ চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ ।
মমতাজ চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের বিল ভাউচারে মালামাল ক্রয় করে এরশাদ তার নিজ নামীয় ফার্মের নামে সাপ্লাই দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে । এরশাদের প্রতারণা বুঝতে পারলে মমতাজ চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ এর মালিক তার সাথে হিসেব নিয়ে বসেন । হিসেব নিকাশের পর প্রমানিত হয় এরশাদ ৭০,০০,০০০=/ (সত্তর লক্ষ টাকা) আত্মসাধ করেন । আত্মসাধকৃত টাকা পরিশোধের কল্পে তার পৈত্রিক ওয়ারিশন সূত্রে প্রাপ্ত জমি থেকে আংশিক জমি লিখে দেন প্রাপক বরাবর এবং বাকী টাকার চেক প্রদান করেন ।
পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ না করে উল্টো পাওনাদারদের বিরুদ্ধে পুলিশি হয়রানীসহ মামলা হামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে বিভিন্ন স্যাসাল মিডিয়ার মাধ্যমে । ইতিপূর্বে এলাকার বিভিন্ন জনের নামে মিথ্যা মামলাও দিয়েছেন ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩৭ নং ওয়ার্ড এলাকার কয়েকজন বলেন, হাফিজের ছেলে এরশাদ হোসেন একটা প্রতারক, টাউট, বাবা মায়ের মান সন্মানের পাশাপাশি এলাকার মান সন্মান ক্ষুন্ন করেছে । তার যন্ত্রনায় এলাকাবাসী অতিষ্ট ।
কেউ কেউ বলছেন এরশাদ এখন মামলাবাজ লোক । মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানীসহ মামলার বরাতে অন্যায়ভাবে টাকার কামানোর একটা ফন্দি ।
পাওনাদাদের টাকা যাতে না দিতে হয়,সেই লক্ষে এলাকা ভিত্তিক কিশোর গ্যাং এর উদ্ভোব ঘটায় এই এরশাদ ।
গত ৫ আগস্ট ২০২৪ইং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এলাকা থেকে গা ঢাকা দেয় এরশাদ ।
উপরোক্ত বিয়য়ে এরশাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়,তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত বিষয় । দীর্ঘদিন যাবৎ তার সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ নেই । এদিকে জিএমপি‘র গাছা থানায় এরশাদের বিরুদ্ধে জিডি,অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে অফিসার ইনচার্জ আলী মোহাম্মদ রাশেদ জানান, এরশাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি । যার সত্যতাও মিলেছে ।