মাদক ব্যবসায়ী চক্রের ০২ সদস্য গ্রেফতার ,৩৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার এবং মাদক পরিবহণে ব্যবহৃত পিকআপ জব্দ।
র্যাব-১ এর বিশেষ অভিযানে রাজধানীর বাড্ডা হতে অভিনব কায়দায় মাদক পরিবহণকালে মাদক ব্যবসায়ী চক্রের ০২ সদস্য গ্রেফতার \ ৩৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার এবং মাদক পরিবহণে ব্যবহৃত পিকআপ জব্দ।
বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মাদকাসক্তি একটি বহুমাত্রিক সামাজিক সমস্যা। এ সমস্যা ক্রমশঃ বিস্তৃত হচে্ছ, ব্যক্তি হতে পরিবার, পরিবার হতে সমাজ, সমাজ হতে রাষ্ট্রে। মাদকাসক্তির প্রধান শিকার তর“ন এবং যুব সমাজ। যে যুব সমাজ দেশ ও জাতির আগামী দিনের চালিকা শক্তি, তাদের একটি অংশ মাদকাসক্তির কবলে পড়ে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড যেমন- ছিনতাই-রাহাজানি, দস্যুতা, চাঁদাবাজি, ইত্যাদি অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময়ই মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। এই পর্যন্ত র্যাব বিপুল পরিমান দেশী/বিদেশী অবৈধ মাদক উদ্ধার করে জনমনে্রআস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
মাদকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে চলমান মাদক বিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে যে, বেশ কিছুদিন ধরে একটি মাদক ব্যবসায়ী চক্র দেশের বিভিন্ন ¯’ান হতে মাদক দ্রব্য কৌশলে রাজধানীসহ আশপাশের জেলায় নিয়ে আসছে। র্যাব-১ ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি মাদকের বড় চালান আটক করতে সক্ষম হয়েছে। চক্রটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। কখনো যাত্রীবাহী বাসে করে, কখনো কখনো ট্রাকে করে, আবার কখনো পিকআপে করে মাদকদ্রব্য নিয়ে আসছে বলে জানা যায়। গোপন সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ হতে একটি পিকআপে মাদকদ্রব্য গাঁজার একটি বড় চালান রাজধানীর উদ্দেশ্যে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে মাদক ব্যবসায়ী চক্রটিকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং মাদকদ্রব্যের চালানটির গতিবিধি অনুসরণ করার লক্ষ্যে অবস্থান নেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ১৮ ফেব্র“য়ারি ২০২০ ইং তারিখ আনুমানিক ০৭৩০ ঘটিকায় র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন প্রগতি স্বরণী রোড¯’ কেএসডি ট্রেডিং এন্ড কোম্পানীর সামনে পাঁকা রাস্তার উপর অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃ জেলা মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সদস্য ১) মোঃ শরিফুল ইসলাম (২৫), পিতা- মোঃ কামাল হোসেন, মাতা- মোছাঃ জুলিয়া বেগম, সাং- নারাইশ, পোঃ ও থানা- ব্রাক্ষণপাড়া, জেলা- কুমিলা ও ২) মোঃ মাইনুদ্দিন @ আবন (২৪), পিতা- মৃত মকতুল হোসেন, মাতা- মোছাঃ রাহেলা খাতুন, সাং- রামচন্দ্রপুর বালাক, পোঃ সালদানদী, থানা- ব্রাক্ষণপাড়া, জেলা- কুমিলা’দ্বয়কে গ্রেফতার করে। এসময় ধৃত আসামীদের চালিত প্রাইভেটকার হতে ৩৬ কেজি গাঁজা ও নগদ ৮২২০/- টাকা উদ্ধার করা হয় এবং মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত পিকআপটি জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ মাদক চোরাচালানকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা হবিগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে চোরাচালানের মাধ্যমে গাঁজা নিয়ে আসত। পরবর্তীতে গাঁজার চালানগুলো পিকআপে করে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট সরবরাহ করা হয়। এই চক্রের অন্যতম সদস্য কুমিলা জেলার জনৈক মাদক ব্যবসায়ী। সে অবৈধভাবে গাঁজার চালান দেশে নিয়ে এসে তার সহযোগী ধৃত আসামী শরিফুল ও মাইনুদ্দিন এর মাধ্যমে মাদকের চালান রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় নিয়ে এই সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের নিকট পাইকারী মূল্যে বিক্রয় করে বলে জানায়।
ধৃত আসামী মোঃ শরিফুল ইসলাম’কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে পেশায় একজন পিকআপ চালক। সে ইতিপূর্বে এলাকায় ইজিবাইক চালাত। পরবর্তীতে সে কুমিল্লা জেলার জনৈক মাদক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ে জড়িত হয়। মাদক ব্যবসার কাজে ব্যবহারের জন্য সে জব্দকৃত পিকআপটি ক্রয় করে। সে বর্ণিত গাঁজার চালানটি নারায়নগঞ্জ হতে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে আসছিল বলে জানায়। সে ইতিপূর্বে ১০/১২ টি মাদকের চালান রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরে নিয়ে এসেছে বলে স্বীকার করে। চালান প্রতি মাদক ব্যবসায়ীরা তাকে ৪৫,০০০/- টাকা করে দিত বলে জানায়।
ধৃত আসামী মাইনুদ্দিন’কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে পেশায় ট্রেইলার্সের কাজ করে। ট্রেইলার্সের কাজের পাশাপাশি সে দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। মাদক পরিবহণে সে ধৃত আসামী শরিফুল এর সহযোগী হিসেবে কাজ করে। সে ইতিপূর্বে ০৮/১০ টি মাদকের চালান রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় নিয়ে এসেছে বলে স্বীকার করে। চালান প্রতি ধৃত আসামী সুমন তাকে ২০,০০০/- টাকা করে দিত বলে জানায়। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন ।