রনি আহম্মদ:
গত ৭ জুলাই রাত্র অনুমান ২০.২০ ঘটিকার সময় কোনাবাড়ী থানাধীন বাঘিয়ার চর জনৈক আবুল কালাম আজাদ এর পরিত্যাক্ত ইট ভাটার পাশে বিলের পানিতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ০২ জন ব্যক্তির মৃতদেহ পাওয়া যায়। কোনাবাড়ী থানা পুলিশ উক্ত লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এমতাবস্থায় অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কোনাবাড়ী থানার মামলা নং-০৮, তারিখ-০৮/০৭/২০২১ ইং, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
মামলা রুজু হওয়ার পর জনাব জাকির হাসান,উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (উত্তর) মহোদয়ের তত্বাবধানে তথ্য প্রযুক্তি ও ম্যানুয়েল ইন্টিলিজেন্স এর সহায়তায় অপরাধ উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব রেজওয়ান আহমেদ এর নেতৃত্বে সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোনাবাড়ী জোন) জনাব সুভাশীষ ধর এর অংশগ্রহনে কোনাবাড়ী থানার একাধিক টিম কোনাবাড়ী থানা এলাকা, কালিয়াকৈর ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ সহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত ঘটনায় সন্দিগ্ধ হিসাবে আসামী ১। মোঃ শৈকত সরকার (২৪), পিতা-মোঃ সাইদুল সরকার, মাতা-মোসাঃ পারভীন খাতুন, সাং-শৈলমারী, থানা-ধুনট, জেলা-বগুড়া, এ/পি সাং-খোকন এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া ডাইংকিনি চন্দ্রা মোড়, নাগরার ডাল, ইয়াছিন হোটেল, থানা-কালিয়াকৈর, জেলা-গাজীপুর, ২। রাসেল প্রধান (২৫), পিতা-মুনসুর আলী, মাতা-রাহেলা বেগম, সাং-কিসমত দূর্গাপুর মধ্যপাড়া, থানা-গোবিন্দগঞ্জ, জেলা-গাইবান্ধাদ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী রাসেল বর্নিত হত্যা কান্ডের ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং তার সনাক্ত মতে নিহতের পরিচয় ১। মোঃ মাহমুদুল হাসান (২০), পিতা-মোঃ আলমগীর মিয়া, মাতা-মোর্শেদা বেগম, সাং-চাঁদপাড়া, থানা-মিঠাপুকুর, জেলা-রংপুর, ২। মোঃ রাকিব হোসেন (১৮), পিতা-আলম মিয়া, মাতা-উজালা বেগম, সাং-সাতনাই কলোনী, থানা-ডিমলা, জেলা-নীলফামারী, উভয়ের বর্তমান ঠিকানা-আমবাগ (শাহানা বেকারী), থানা-কোনাবাড়ী, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর এর কর্মচারী হিসাবে প্রকাশ করে। আসামী রাসেল এর দেখানো মতে কোনাবাড়ী থানাধীন বাঘিয়ার চক জনৈক আবুল কালাম আজাদ এর পরিত্যাক্ত ইট ভাটার পাশে বিলের পানির মধ্যে সুইপার সুবল এর মাধ্যমে ডিসিজড মাহমুদুল হাসান এর পরিহিত জিন্সের প্যান্ট (বেল্ট সংযুক্ত) এবং বিলের পাড় হইতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কংক্রিটের তৈরী সীমানা পিলারের ভাঙ্গা অংশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া নিহত রাকিব এর ব্যবহৃত আইটেল বাটন মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। অপর আসামী শৈকত এর নিকট হতে নিহত মাহমুদুল হাসান এর আইটেল টাচ্ মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় গত ইং ৩/৭/২০২১ তারিখ সময় রাত্রি অনুমান ১১.৩০ ঘটিকায় আসামি রাসেল প্রধান ডিসিজড (ক) মাহমুদুল হাসান (২০), (খ) মোঃ রাকিব (১৮), দ্বয়কে বাঘিয়ার চক, বিলের পাড়ে নিয়ে মাহমুদুল হাসান এর নিকট পাওনা ২৫০০ টাকা পরিশোধ নিয়ে বিরোধের জেরে জাদু দেখানোর কথা বলে কৌশলে হাত পা বেঁধে প্রথমে মাহমুদুল হাসানকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে। পরে রাকিব হোসেন যখন বলে সে সবাইকে বলে দেবে, তখন আসামী পাশে পড়ে থাকা সিমেন্ট এর সীমানা পিলার দিয়ে মাথায়, বুকে ও পিঠে আঘাত করে হত্যা করে পানিতে ডুবিয়ে দিয়ে মৃতদেহের উপর ঘাস লতাপাতা দিয়ে ঢেকে দেয় এবং ডিসিজডদের নিকট থাকা ০২টি মোবাইল সেট ও নগদ ২০০ টাকা নিয়ে চলে যায়। পরদিন সকালে কালিয়াকৈর এর চন্দ্রা মোড়ে গিয়ে ভাতের হোটেল এর মালিকের ছেলে শৈকতের নিকট ১৪০০ টাকায় ০১টি মোবাইল বিক্রি করে আসামীর গ্রামের বাড়ী গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধায় চলে যায়। গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন চন্দ্রা হতে ডিসিজড মাহমুদুল হাসানের মোবাইল ফোন সহ শৈকতকে গ্রেফতার করা হয় এবং ১০জুলাই ২০২১ তারিখ ১২.৩০ ঘটিকায় গাইবান্ধা এর গোবিন্দগঞ্জ হতে আসামী রাসেল প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।