অভাবের তাড়নায় দত্তক দেওয়া শিশু অক্ষত উদ্ধার,ওসি‘র তৎপরতায় মায়ের মুখে আনন্দের বন্যা
আলমগীর কবীর:
নেত্রকোনা জেলার সৈয়দপুর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (১৯) ও তার স্ত্রী সাবিনা (২১) দম্পতির কোল জুড়ে আসে একটি ফুটফুটে ছেলে শিশু সন্তান । শিশুটি ঘরে আসার সঙ্গে যেমন ছিল খুশির খবর-ঠিক সেই মহুর্তে যেনো কালো মেঘের ঘনঘটা । শিশুটির ভবিষ্যত নিয়ে নানা প্রশ্নবানে দিশেহারা ছিল মা,বাবা ।যাদের নুন আনতেই পান্তা ফুরায় । দারিদ্রতার দুষ্টুচক্র দিকবিদিক হারা করেছিল তাদেরকে । নাম যার মোঃ আব্দুল্লাহ । সন্তানের জন্মে একদিকে যেমন আনন্দের বন্যা বইছিল, অন্যদিকে দারিদ্র্যতার কারণে শিশুটির লালন-পালন ও চিকিৎসার খরচ তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় মনির ও সাবিনার জন্য ।
দারিদ্রতার দুষ্টুচক্র আর প্ররোচনায় অভাবের কারণে দুই মাস পার না হতেই মনির হোসেন তার নিকট প্রতিবেশীর পরামর্শে শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।সেই সুযোগে শরীয়তপুর জেলার সারেকান্দি গ্রামের মৃত ফরেজ আলীর ছেলে লুৎফর রহমান শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ দেখান এবং কিছু অর্থের বিনিময়ে আব্দুল্লাহকে দত্তক নেন।
কিন্তু সন্তান হারানোর শোক ও মাতৃত্বের অনুভূতি জাগ্রত হলে আব্দুল্লাহর মা-বাবা তাকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ব্যর্থ হয়ে তারা গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হালিমের সহায়তা চান।
জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম তৎপর হয়ে বাচ্চাটিকে উদ্ধারে একটি বিশেষ আভিযানিক টিমসহ নিজে অভিযান পরিচালনা করেন। উদ্ধার অভিযানের সফল সমাপ্তিতে গাজীপুর সদর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক ও গাজীপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইজাদুর রহমানের উপস্থিতিতে শিশু আব্দুল্লাহকে তার প্রকৃত বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
মানবিক ওসি আব্দুল হালিম আবেগ প্রবণ হয়ে বলেন,আমার এই মানবিক কাজ অব্যাহত থাকবে যতদিন বেঁচে থাকবো।তিনি আরও বলেন,বর্তমান সময়ে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জল করতে আপনাদের সার্বিক সহযোগীতা পেলে অন্যান্য পুলিশি সেবার পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত একটি মানবিক কাজ করতে চাই । তার এই উদ্যোগ স্থানীয়দের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছে এবং ইতিপূর্বেও তার বেশ কয়েকটি মানবিক কার্যক্রম গণমাধ্যমে আলোচিত হয়েছে।