শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, সকাল ৮:৬ সময়

ব্রেকিং নিউজ **গাইবান্ধায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা গাইবান্ধায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা** **পীরগঞ্জে এসএসসিতে উপজেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী জুলকার নাইন যুহা পীরগঞ্জে এসএসসিতে উপজেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী জুলকার নাইন যুহা** **পীরগগঞ্জে পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকায় মন্ডল প্লাস্টিক কোম্পানীকে জরিমানা পীরগগঞ্জে পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকায় মন্ডল প্লাস্টিক কোম্পানীকে জরিমানা** **অপেক্ষার প্রহর শেষে চট্টগ্রামে ফিরলো জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক অপেক্ষার প্রহর শেষে চট্টগ্রামে ফিরলো জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক** **ছবি; জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেল বেপারি ছাত্রলীগের চেয়ে বড় সন্ত্রাস আর কেউ নেই আমরাই বড় ;জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেল বেপারি** **গাজীপুরে লিফটে আটকে মৃত;ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে তদন্ত কমিটি গাজীপুরে লিফটে আটকে মৃত;ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে তদন্ত কমিটি** **গাইবান্ধার ছালুয়া ফজলে রাব্বী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ বন্ধ হওয়ার নেপথ্যের কথা গাইবান্ধার ছালুয়া ফজলে রাব্বী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ বন্ধ হওয়ার নেপথ্যের কথা** **গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বেড়েছে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বেড়েছে** **গাজীপুরে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসে খুন হলো স্বামী গাজীপুরে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসে খুন হলো স্বামী** **দু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শেষ হলো কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠু হয়েছে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন** **জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের রাস্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবীতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি পেশ জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের রাস্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবীতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি পেশ** **পীরগঞ্জের করতোয়া নদীতে বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় বাড়িঘরে হামলা মারপিট পীরগঞ্জের করতোয়া নদীতে বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় বাড়িঘরে হামলা মারপিট** **পীরগঞ্জে গৃহবধূকে মারপিট থানায় অভিযোগ পীরগঞ্জে গৃহবধূকে মারপিট; থানায় অভিযোগ** **ছবি: নীড় প্রকল্পের সুউচ্চ বাউন্ডারী গাজীপুর মহানগরীর পলাশোনায় স্মার্ট এগ্রো‘র বাউন্ডারি নির্মান করে অবৈধভাবে ফসলী জমি দখলের চেষ্টা** **পীরগঞ্জে ভূমিহীন কল্যাণ সমিতির দশম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত পীরগঞ্জে ভূমিহীন কল্যাণ সমিতির দশম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত** **কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীর প্রচারণায় বাধা থানায় অভিযোগ কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীর প্রচারণায় বাধা থানায় অভিযোগ** **গাজীপুরে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ গাজীপুরে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ** **গাইবান্ধায় মে দিবসের কর্মসূচিতে হিট স্ট্রোকে শ্রমিকের মৃত্যু গাইবান্ধায় মে দিবসের কর্মসূচিতে হিট স্ট্রোকে শ্রমিকের মৃত্যু** **মানবতার ফেরিওয়ালা মিল্টন সমাদ্দার এখন ডিবি’র জালে আটক মানবতার ফেরিওয়ালা মিল্টন সমাদ্দার এখন ডিবি’র জালে আটক** **গাজীপুরে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে মে দিবস ২০২৪ পালিত গাজীপুরে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে মে দিবস২০২৪ পালিত**

কীর্তিমান মানুষের আত্মত্যাগে এই বিজয়

logoমো: রাবিউল হাসান (ফিরোজ):সোমবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২১, রাত ৮:২৭ সময় 0999
ছবি; প্যারী মোহন আদিত্য

ছবি; প্যারী মোহন আদিত্য

মো: রাবিউল হাসান (ফিরোজ):
যিনি আলোর সন্ধ্যান পেয়েছেন,যিনি পরম পিতার সহিত একান্ত ঘনিষ্ট,সমগ্র অন্তর দিয়ে যার আকুল প্রার্থনায় একনিষ্ঠ তীব্রতা ও সভ্যতায় বিশ^মানবের মনে শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীর ঝংকার তুলেছিলেন তিনি আমাদের একাত্তরের শহীদ প্যারী মোহন আদিত্য।
আমরা বাবা ও মার কাছে (আছাহাব উদ্দিন আহমেদ ও মোছাঃ হাফিজা বানু) শুনেছি,প্যারী মোহন আদিত্য এবং রাস বিহারী আদিত্য কাকার কথা। বাবা বলতেন, ’হিমাইতপুর ঠাকুর বাড়ীতে শ্রীশ্রীঠাকুরের সামনে বসে থাকতেন। হল্কা, পাতলা, ফর্সা একটি তরুন। খুবই শান্ত দেখতে। তিনি হলেন প্যারী মোহন আদিত্য।’ আমাদের প্রানপ্রিয় শ্রদ্ধেয় জ্যাঠামহাশয় শ্রীশ্রীঅমরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী।
আর বাবা ছিলেন বড় ও ছোট ভাইয়ের মত। বাবার কাছে শুনেছি, জ্যাঠামহাশয় শ্রীশ্রীঅমরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী (শ্রীশ্রীবড়দা) বলতেন, ”ও খুব ভাল ছেলে, ওকে তোদের বাড়ীতে নিয়ে যাস, ওর নাম প্যারী মোহন আদিত্য। ওর বড়ভাই রাসবিহারী আদিত্যও মাঝে মাঝে ঠাকুরের কাছে আসে।” এরপর থেকে প্যারীকাকা যত বার পাবনাতে আসতেন ততবারই আমাদের এখানে আসতেন। প্যারীকাকার বয়স তখন হবে পনের বা ষোল। শৈশব পার হয়ে যুবক থেকেই তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষিত এবং ঠাকুর পরিবারের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি ঠাকুরকে কখনো অনুকরন করতেন না। অনুসরন করতেন, শ্রীশ্রীঠাকুর এবং জ্যাঠামহাশয় (শ্রীশ্রীবড়দা) যা বলতেন তা তিনি বিনা দ্বিধায় পালন করতেন।
আমার কিছুটা মনে আছে, আমাদের ছাতিয়ানীর বাড়ী ও পাবনা মেকানিক্যাল ওয়ার্কসপে এসেও ঠাকুরের আলোচনা করতেন। আমার বাবাও সবাইকে বলতেন ’প্যারী মোহনের আলোচনা শোন, প্যারী মোহন তুমি বল, ঠাকুরের কথা যতই শুনি ততই ভাল লাগে। সৎসঙ্গ সংবাদে তাঁর অনেক সংবাদ,গল্প এবং কবিতা পড়েছি। জানা যায় তিনি ছোট বেলা থেকেই সাহিত্য চর্চা করতেন্
নিভৃত পল্লীর নিরালায় মরা গঙ্গায় জীবনের জোয়ার এনেছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। তাঁরই আর্দশে আর্দশীত হয়েছিলেন প্যারীকাকা। টাঙ্গাইলের পাকুটিয়া থেকে পাবনায় যাতায়াত করা তখন অনেক কষ্টকর ছিল। এই কষ্টকে আনন্দভবে পাবনাতে ঠাকুরের কাছে বার বার ছুটে আসতেন। প্যারীকাকা নিজ জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুরের শ্রীচরণে। তাই তো তিনি দেশের জন্য জীবন বাজী রেখে একাত্তরে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। দেশকে স্বাধীন করেছেন নিজের রক্ত এবং জীবন বির্ষজন দিয়ে। 
মানুষের প্রতি ভালবাসার কমতি ছিল না প্যারীকাকার। তাঁকে দেখে এবং তাঁর কথা শুনে মনে হত শ্রীশ্রীঠাকুরের সমস্ত কিছুই যেন তিনি নিতে পেরেছেন। তাঁকে আমরা দেখেছি পাবনা সৎসঙ্গ আশ্রমে এসেও বাংলার পল্লীমায়ের হৃৎস্পন্দনের কথা বলতে। দেখেছি পদ্মাতীরে কীর্তনে,নৃত্যে-বাদ্যে-আলিঙ্গনে,আনন্দে,সেবা করায়, ভক্তদের যত্নের প্রতিও তার কোন কমতি ছিল না।
তিনি বলতেন,এ সাধনা সবাইকে এবং পারিপার্শিকে নিয়ে। যতদিন প্যারীকাকা ও রাস বিহারীকাকা পাবনা সৎসঙ্গ আশ্রমে থাকতেন ভক্তদেরকে আকুন্ঠ শ্রম,নিষ্ঠা ও ক্রমাগতির ভিতর দিয়ে অপূর্ব সংগঠন কৌশলে ঐ অল্প বয়সে সবাইকে ভালবাসা বিতরনের মাধ্যমে,সবার অন্তরের ভিতর চলে যেতেন। তিনি বলতেন,’সবই পরম পিতার দয়া।
যুগ মহা মানব শ্রীশ্রীঠাকুরের সহ প্রতি ঋত্বিক ছিলেন প্যারী মোহন আদিত্য। ১৯৫৮ সালে শ্রীশ্রীঠাকুর ব্যবহৃত পাদুকা ভারতের বিহার রাজ্য থেকে মাথায় করে নিয়ে আসেন তৎকালীন ময়মনসিংহের পাকুটিয়া গ্রামে। যা আজও পাকুটিয়া আশ্রমে সংরক্ষিত আছে। বাবার (আছাহাব উদ্দিন আহমেদ) কাছে শুনেছি প্যারী মোহন আদিত্য শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্ম স্থান উদ্ধারের জন্যও কাজ শুরু করেছিলেন।
ভক্তবীর প্যারীকাকার কথাই বলছি। তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার মধুপুর ভাওয়াল গজারী বনের নিকটবর্তী পাকুটিয়া গ্রামে তাঁর জন্ম। গ্রাম ক্ষুদ্র বটে কিন্তুু প্রকৃতির অফুরন্ত দানে সমৃদ্ধ। আর এখানেই শ্রীশ্রীঠাকুর অস্থায়ী সৎসঙ্গের কার্যালয় করতে আশীর্বাদ করলেন (পাবনাতে পাকাপাকি কিছু না হওয়া পর্যন্ত)। উল্লেখ্য পূর্ব পাকিস্থানের পাবনাতে শ্রীশ্রীঠাকুরের সমস্থ স্থাবর ও  অস্থাবর সম্পপ্তি আমার বাবা (আছাহাব উদ্দিন আহমেদ) কে জেনারেল পাওয়ার অব এর্টনী রেজিট্রি: করে দিয়েছেন। আমার বাবা পাবনায় রাধানগরে মেকানিক্যাল  ইঞ্জিনিয়ারীং ওয়ার্কসপ করার জন্য কিছু জায়গা সরকারের কাছ থেকে ক্রয় করেন। শ্রীশ্রীঠাকুর এতই বাবাকে ভালবাসতেন সেজন্য পাবনা মেকানিক্যাল  ইঞ্জিনিয়ারীং ওয়ার্কসপের জন্য শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর আশ্রমের মেশিনারীজ গুলি বাবার (আছাহাব উদ্দিন আহমেদ) মেকানিক্যাল  ইঞ্জিনিয়ারীং ওয়ার্কসপে স্থানান্তরের অনুমোতি দান করেন। তৎকালিন র্পূব পাকিস্থানে শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রায় দশ হাজার বিঘা সম্পত্তি ছিল। তখনকার ভ’মি দস্যু অনেক সম্পত্তি গ্রাস করিয়া নেয় এবং আরো অনেক সম্পদ তখনকার সরকার ইকুজিশন করে নেয়। আমার বাবা তখন অনেক মামলা করেন এবং প্রশাসনের সহিত যোগাযোগ করেও  সম্পত্তি রক্ষা করতে পারে নাই। পাবনাতে আমার বাবা লোকের হিংসার পাত্র হযে যায। যতটুকু সম্ভব (২/৩ হাজার বিঘা) শ্রীশ্রীঠাকুর তার বড় খোকা শ্রীশ্রীঅমরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী ও ষোড়শী বালা দেবীর নামে এস এ এবং আর এস রেকর্ড করায়ে রাখেন। আমার বাবার কোন লোভ লালসা ছিল না। তিনি ইচ্ছা করলে শ্রীশ্রীঠাকুরের সমস্ত সম্পত্তি নিজ নামে নিতে পারতেন। শ্রীশ্রীঠাকুরের সম্পত্তির উপর পাবনা যে মানষিক হাসপাতাল অবস্থিত সেই সম্পত্তির জন্য তৎকালীন সরকার যে ক্ষতি পুরন দেওয়ার ঘোষনা দেন,সেই ক্ষতিপুরনের কোন অর্থ বাবা গ্রহন করেন নাই। প্যারীকাকাও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের বিচিত্র অনুভুতির কথা আমাদের বলতেন। জানা যায়,পাকুটিয়া গ্রাম বাসিদের তিনি ছিলেন পরমবন্ধু,বয়োবৃদ্ধদের তিনি ছিলেন পরম স্নেহের পাত্র।
এ লেখাটি নিয়ে ভাবছি কি লিখবো কিভাবে লিখবো ?আর ভাবার সাথে সাথে ভাবছি রাসবিহারী আদিত্য কাকার ও আমার বাবার কথা। বাবার (আছাহাব উদ্দিন আহমেদ) জীবনের সাধনার ইতিহাসও আমি জানি। ইহা যেমন চমক প্রদ তেমনি অনন্য সাধারন। বাবা ছিলেন সত্যবাদী ও নিষ্ঠাবান। তাই ঠাকুর পরিবার তাকে সবসময় কাছে টেনে নিতেন এবং খুব ভাল বাসতেন। ১৯৭১ সনে শ্রীশ্রী অমরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী জ্যাঠামহাশয় আমাকে একদিন তাঁর কাছে ডেকে নিয়ে বললেন যে,”তোর বাবা সত্যবাদী ও সৎ। আমি এমন লোক দ্বিতীয়জন আমার জীবনে দেখি নাই। তোর বাবাসহ সবাইকে নিয়ে আসলে ভাল হত। তবে তোর বাব সব সময় ভালই থাকবে। তোর বাবা নিজেস্ব কিছু মানুষ হারিয়েছে কারন তোর বাবা মিথ্যা বলা পছন্দ করত না।
  বাবার কাছে শুনেছি, প্যারীকাকা নির্জ্জনে একান্তে বসিয়া সাধনা করতেন। তিনি সৎনাম জপ করিতেন এবং তিনি ভাবিতেন যে, প্রত্যেকের ভিতরই বোধ হয় সৎনাম যেন দিবানিশি জপ হয়। প্যারীকাকাকে দেখেছি আবার তাঁ কথা অনেকের কাছে শুনেছি। স্বর্গীয় রাসবিহারী আদিত্যকাকাও অসাধারন মানুষ ছিলেন। শ্রীশ্রীঠাকুর স্বর্গীয় রাসবিহারী আদিত্য কাকার উপর দায়িত্ব অর্পনের সাথে সাথে কর্মের ও জ্ঞানের অফুরন্ত ভন্ডারী  প্যারী মোহন আদিত্য কাকাকেউ বার বার কাছে টেনে নিতেন শ্রীশ্রীঠাকুর। সংসারের অসচ্ছলতার কারনে বিদ্যা অর্জন করা সম্ভব না হলেও জ্ঞানের অধিকার ছিলেন প্যারী মোহন আদিত্য। তাঁর জানার বাহিরে ছিল না বিজ্ঞান, রাজনীতি, ধর্মনীতি, সমাজ ও সাংস্কৃতি প্রভৃতি।
কর্মদ্দীপনা তাঁর সীমাহীন। গ্রামে এক গরীব ঘরে জন্ম গ্রহন করিয়া সর্বপ্রকার প্রতিকূলতার সাহিত সংগ্রাম করিয়া শ্রীশ্রীঠাকুরের সাধনার বলে কপর্দ্দকশূন্য ও সহায় সম্বলহীন হইয়াও কঠোর পরিশ্রমের ফলে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিলেন প্যারী মোহন আদিত্য।
বিনয়ী, নম্র,সদাহাস্য, সদালাপী প্যারী কাকার সাহস ছিল তার আত্মবিশ্বাস। সবার সাথে ছিল তাঁর অবাধ মেলামেশা। বাবার কাছে শুনছি,তিনি কাউকে বাদ দেওয়ার কথা কখনো ভাবতেই পারতেন না। ভাবতেন সবাই পরম পিতার সন্তান। কাউকে বাদ দেবার তো উপায় নাই। যাকে বাদ দিলাম, যাকে হারালাম তার অনুরূপ আর কাউকে কখনো পাব না। তাই সবাই আমার ভাই,বোন,মা এবং বাবা। 
স্মৃতিপটে ভেসে আসছে সেই নাম শহীদ প্যারী মোহন আদিত্য। নিরীব নির্ভীক কর্মী, মানবতার সেবক। সৎসঙ্গের আদর্শে বিশ্বাসী,দেশপ্রেমীক এই মানুষটি কী অমানুষিক পরিশ্রম করেছেন সৎসঙ্গের জন্য, পরিবারের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য। কিন্তুু কেন? কেন পরিমশ্রম করেছেন তারা দিবারাত্রি? সৎসঙ্গের ক্ষমতা মজবুত করার জন্য,নিজ দলীয় বুনিয়াদ মজবুত করার জন্য? নেতৃত্বের লোভে? গণপ্রতিনিধি না মন্ত্রী হওয়ার আশায়? না, নিশ্চয় তা নয়। জাতীকে,দেশকে,সৎসঙ্গকে, দেশের মানুষকে ভলবাসত তার জন্য। ভালবাসা কারো একচেটিয়া নয়। ধনীর বা ক্ষমতা বানদের যদি ভালবাসার প্রাণ থাকে, তবে সে প্রাণ গরীদেররও আছে। গরীবের আত্মত্যগের মহানুভবতা প্রাধান্য পায়না, এই ঘুনে ধরা সমাজে। লোভীদের সমাজ ব্যবস্থায় তারা অজ্ঞাত; অখ্যাত থেকেই যায়। শুধু সকলেরই নজর পড়ে তাজ মহলের দিকে। যাদেও শ্রমে তাজমহল  যার উপর দাড়িঁয়ে আছে সেই ব্যক্তিদের খোঁজ কেউ নেয় না,স্মরনও করে না।
আজ একাত্তরে শহীদ প্যারী মোহন আদিত্যকে স্মরন করছি আন্তরিক শ্রদ্ধার সাথে। বাংলাদেশের ত্রিশ লক্ষ অমর শহীদের অমর কীর্তি স্বাধীন বাংলাদেশ। বাংলার মানুষ,মাটি,বাংলার আকাশ বাতাস তোমাদের ভুলবেনা। ভূলতে পারে না।

বিষয়- ইতিহাস ও জীবনী জাতীয় বীর

মন্তব্য


মন্তব্য করতে হলে লগইন করুন অথবা নতুন হলে রেজিস্ট্রেশন করুন

এই বিভাগের আরও খবর


আইটি সম্পাদকঃ সুকান্ত ধর